আইয়ুব ভুঁইয়া
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুঁইয়ার জন্ম ১৯৬৪ সালের ৬ মার্চ ফেনির ফুলগাজী উপজেলার নূরপুরে। তিনি স্থানীয় জি এম হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি এবং ফেনী সরকারী কলেজ থেকে এইচ এস সি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ভর্তি হন। সেখান থেকে অনার্স ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৬ সালের ২০ মার্চ দৈনিক জনতায় যোগদানের মধ্য দিয়ে আইয়ুব ভুঁইয়ার সাংবাদিকতা শুরু। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে দৈনিক ভোরের কাগজ, দৈনিক খবর, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এবং দৈনিক আজাদসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ মাধ্যমে তিনি গুরুতৃপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় আট বছর তিনি ভোরের কাগজের চীফ রিপোর্টার ছিলেন৷ বর্তমানে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) বার্তা সম্পাদক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
সাংবাদিকদের রুটিরুজির সংগ্রামেও আইয়ুব ভুঁইয়া বিভিন্ন সময়ে বলিষ্ঠ ভ‚মিকা পালন করেছেন। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) তিনবার ইসি সদস্য ছিলেন। ১৯৯২ সালের ২১ জুন সাংবাদিকদের ‘সেকেন্ড হোম’ জাতীয় প্রেস ক্লাবে পুলিশের বর্বরোচিত হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরদিন জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা চলাকালে একটি অপ্রীতিকর ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এতে পুলিশ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তিনি দু’মাস আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে আইয়ুব ভুঁইয়া ২০০২ সালের ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) থেকে চাকুরিচ্যুত হন।
২০২০ সালে জাতীয় প্রেস ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে আইয়ুব ভূঁইয়া কমিটির এক নম্বর সদস্য নির্বাচিত হন এবং ক্লাবের সেমিনার, মিট দ্য প্রেস ও আন্তর্জাতিক লিয়াঁজো কমিটির আহŸায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের নির্বাচনে একইভাবে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক নম্বর জয়েন্ট সেক্রেটারি নির্বাচিত হন এবং পদাধিকার বলে ক্লাবের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তিনি ক্লাবের গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি গত তিন দশকে আইয়ুব ভ‚ঁইয়া শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমকালিন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক এবং সাপ্তাহিক পত্রিকায় লেখা-লেখি করে আসছেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ভারতীয় সমরনায়ক জেনারেল অরোরা এবং জেনারেল জ্যাকবের সাক্ষাতকার গ্রহনের দুর্লভ সুযোগ পেয়েছেন তিনি। এছাড়া তিনি বিশ্ব বরেণ্য সেতারবাদক পন্ডিত রবিশঙ্কর এবং কিংবদন্তিতুল্য অভিনেতা দিলিপ কুমারেরও সাক্ষাতকার নিয়েছেন। কবি শামসুর রাহমান, সৈয়দ সামসুল হক, সমরেশ বসু এবং খ্যাতিমান শিল্পী এস এম সুলতান, কাইয়ুম চৌধুরী ও রফিকুন নবীর মতো বরেণ্য ব্যক্তিদের স্নেহধন্য তিনি। ভারতের আসাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (জেইউএ) ২০১৮ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় আইয়ুব ভুঁইয়াকে প্রধান অতিথি করে এবং সংবর্ধনা জানায়। ব্যক্তিগত ও পেশাগত কাজে তিনি এপর্যন্ত ২৬টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে আইয়ুব ভুঁইয়া দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।
